অনলইন ডেস্ক,নারায়নগঞ্জ প্রতিদিন ডট কম : নেত্রকোনায় মনাষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্জুন বিশ্বাসকে (৪২) কুপিয়ে হত্যা করেছে কয়েকজন দুর্বৃত্ত। আজ বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে বারহাট্টা উপজেলার মনাষ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ ও এলাকাবাসী বলছে, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে তিনি খুন হয়েছেন। নিহত অর্জুন বিশ্বাসের বাড়ি উপজেলার রামপুর-দশাল গ্রামে।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রামাণিক প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সন্দেহে ফুয়াদ খান নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। আরও যারা জড়িত তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার ভাষ্য, আজ সকালে প্রধান শিক্ষক অর্জুন বিশ্বাস স্কুলের সহকারী শিক্ষক সুফিয়া সুলতানাকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে করে স্কুলে যাচ্ছিলেন। স্কুলের কাছাকাছি পৌঁছালে স্কুল থেকে প্রায় ৪০ গজ দূরে দুর্বৃত্তরা পথরোধ করে প্রধান শিক্ষককে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহত শিক্ষককে উদ্ধার করে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, মনাষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তহবিলে উন্নয়ন বাবদ সরকারিভাবে ৩০ হাজার টাকা জমা হয়। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্য ওই টাকা উন্নয়ন খাতে ব্যয় না করে নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক অর্জুন বিশ্বাসকে চাপ দেন। এতে প্রধান শিক্ষক রাজি না হওয়ায় স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও কমিটির সদস্য আবুল কাশেম এবং কমিটির অপর সদস্য ফুয়াদ খান ওরফে বাবুসহ কয়েক জনের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে আবুল কাশেমের ভাই কালাচান ও কয়েকজন দুর্বৃত্ত গতিরোধ করে অর্জুন বিশ্বাসকে রামদা দিয়ে কোপায়।
শিক্ষকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং উপজেলার অন্যান্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করে। দিনদুপুরে খুনের ঘটনায় এলাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রামাণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। খুনের ঘটনার পর থেকে আবুল কাশেম ও তাঁর ভাই কালাচান পলাতক রয়েছেন।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে অর্জুন বিশ্বাসের সঙ্গে থাকা সুফিয়া সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
বারহাট্টা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জিএম এনামুল হক বলেন, অর্জুন একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছিলেন। শুনেছি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে বিরোধের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান বলেন, নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খুনের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।
Leave a Reply